মেহেরপুরের গাংনীতে ইলিয়াস হোসেনের হত্যাকারী সবুজের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামবাসি।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সমাজকর্মী, ইমাম ও নারী শিশু সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
ঘাতক সবুজ আহমেদের স্ত্রী সালমা খাতুন বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে আমাকে এবং আমার সন্তানকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার স্বামী সবুজ আহমেদ বাড়িতে আসে।আমার ভাই এবং আমার চাচা ঠেকাতে আসলে ভাইকে আহত ও চাচাকে ছুরি দিয়ে নিশংস ভাবে হত্যা করে । সে একজন মাদকাসক্ত। ঘাতক সবুজের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই । ফাঁসি না হলে সে জেলখানা থেকে বের হয়ে আমাদের হত্যা করবে।
নিহত ইলিয়াস হোসেনের মেজ ভাই আব্দুল মাবুদ হোসেন বলেন, এমন কুলাঙ্গার জামাই যেন আর কারো ঘরে না আসে।আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি এবং সেই সাথে ফাঁসি দাবি জানাচ্ছি।আমার ভাই ইলিয়াস হোসেন অত্যন্ত সাদাসিদে একজন মানুষ ছিল। ঘাতক সবুজ আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী শওকত আলী বলেন, পারিবারিক সুশিক্ষা না থাকার কারণে এই ঘাতক সবুজ তার স্ত্রীকে অনেক নির্যাতন করতো।জীবনের ভয়ে সে তার স্বামীর ঘর থেকে পালিয়ে আসে। আমরা সকলে এই খুনির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
আব্দুল জব্বার বলেন, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি ঘাতক সবুজের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করতে হবে ।এবং এর সাথে যারা জড়িত আছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিএনপি নেতা রহিদুল ইসলাম মাস্টার বলেন, সবুজ একজন কুলাঙ্গার জামাই তার কারণে সালমা খাতুন নানাভাবে নির্যাতিত হয়ে আসছে তাই হত্যাকারী সবুজের ফাঁসি দাবি করছি। ইলিয়াস হোসেন এলাকার সবচেয়ে ভালো ছেলেদের মধ্যে অন্যতম। সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলে। অথচ তার মত একজন নিরীহ মানুষকে কুলাঙ্গার সবুজ হত্যা করেছে।
বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান লাভলু মাস্টার বলেন, হত্যাকারী সবুজসহ এর সাথে যারা জড়িত তাদের যদি আইনের আওতায় না আনা হয় তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
সাবেক চেয়ারম্যান কাথুলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহেদ বেল্টু বলেন, সবুজ অনেক রাত্রে বাড়ি ফিরলেও তার পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয় না। সালমা খাতুন বারবার তার শশুর ময়নালকে সবুজ সম্পর্ক অভিযোগ দিলেও সবুজকে শাসন করেনি। ছেলেকে শাসন করলে আজ এ ঘটনা ঘটতো না। সবুজের দ্রুত ফাঁসি দাবি করেন তিনি।
এসময় মানববন্ধনে এলাকার নারী, পুরুষ, শিশুরা অংশ নেন। মানববন্ধন থেকে তারা খুনি সবুজের ফাঁসির দাবি করেন।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন,ইলিয়াস হোসেন হত্যার ঘটনায় সবুজ আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে ভাইয়ের জামাই সবুজ হোসেনের উপূর্যপুরি ছুরিকাঘাতে চাচা শশুর ইলিয়াস হোসেন নিহত হন। এসময় গ্রামবাসি সবুজ হোসেনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।এঘটনায় নিহত ইলিয়াস হোসের মেজ ভাই মাবুদ হোসেন বাদি হয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সবুজ আহমেদ, তার পিতা ময়নাল হক ও মা সুখিয়ারা খাতুনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।